শারামিন আকতার
ভূমিকা: সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে, বাইরে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। তাই জানালার পাশে চুপচাপ বসে আছি। এভাবে করেই আজকের দিনটি কাটিয়ে দিলাম। আর অনুভব করার চেষ্টা করলাম একটি বৃষ্টিমুখর দিনকে।
বৃষ্টিমুখর দিনের অনুভূতি: এ মুহূর্তে আমি যা অনুভব করছি তা কী কওে প্রকাশ করব? আমিতো কবি নই। যদি কবি হতাম তাহলে এখনই রবীন্দ্রনাথের মতো লিখে ফেলতাম একটি কবিতা : ‘মনে পড়ে মায়ের মুখে শুনেছিলাম গান বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান।’
আজ মনে পড়ছে অনেক কথা ; সেই ছোটবেলার কথা। এই বৃষ্টির দিনে আমার মা আনন্দে গেয়ে উঠত সেই গান –
‘কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা মনে মনে।’
আমরাও কিছু না বুঝে মায়ের সাথে গেয়ে উঠতাম, আর কিছক্ষণ হৈচৈ করার সুযোগ পেতাম। সত্যিই ছেলেবেলার দিনগুলোর কোন তুলনাই হয়না।
রাস্তায় দু’একজন লোক ছাতা নিয়ে আস্তে আস্তে হাঁটছে। সমস্ত আকাশ এমন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে, দেখে মনে হয় এখন সন্ধ্যা। সামনের গাছগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে কে যেন খুব যত্ম করে তাদের গোসল করিয়ে দিচ্ছে। আজ আমি সত্যিই অবাক হচ্ছি ; মনে হচ্ছে একেবারে নতুন কিছু দেখছি। নতুন এক দেশ এবং তার প্রকৃতির নতুন আবেশ। রবীন্দ্রনাথতো ঠিকই বলেছেন : ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হইতে দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শিষের ওপর একটি শিশির বিন্দু।’
আজ এই নতুন আবিষ্কারে আমার মনে খুব আনন্দ হচ্ছে। তাই আমার চিৎকার করে গাইতে ইচ্ছে করছে : ‘হৃদয় আমার নাচেরে আজিকে ময়ূরের মতো নাচেরে।’
আমি ঠিক বলতে পারি না এমনই কোন মুহূর্তে কি কবি শেলি তাঁর বিখ্যাত কবিতা লিখেছেন কিনা। কালিদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত অনেক কবি এই ‘বর্ষা’ নিয়ে সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখেছেন। দেখতে দেখতে আজকের দিনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে আমার মন থেকে এই দিনটি কখনোই শেষ হয়ে যাবে না।
উপসংহার: কবি নজরুলের ‘বর্ষা বিদায়’ কবিতার সাথে সুর মিলিয়ে আমিও বৃষ্টিকে আজকের মতো বিদায় জানাচ্ছি :
‘তুমি চলে যাবে দূরে ভাদরের নদী দুকূল ছাপায়ে কাঁদে ছলছল সুরে।
=======